ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা ও সমন জারির পর এবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টেও মামলা হয়েছে ভারতের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে। বিশাল তিওয়ারি নামে এক আইনজীবী এই মামলা করেছেন। এর আগে হিন্ডেনবার্গ বিতর্কের সময়ও সুপ্রিম কোর্টে আদানির বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তিনি।
বিশাল তিওয়ারি তার মামলায় আদানি গোষ্ঠীকে ‘অর্থ জালিয়াতি’ ও ‘স্টক ম্যানিপুলেশন’ এর জন্য অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, আদানি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে ২০ হাজার কোটি রুপি শেয়ার বিক্রি বাতিল করেছে।
এদিকে, ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুস দেওয়ার মামলায় এরই মধ্যে গৌতম আদানি ও তার ভাতিজা সাগর আদানির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটি ও এক্সচেঞ্জ কমিশন। আমদাবাদে শান্তিবন ফার্মে গৌতম আদানির বাড়িতে ও বোড়াকেভে সাগর আদানির বাড়িতে এই সমন নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সমনে গৌতম ও সাগর আদানিকে ২১ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন নিউইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ফেডারেল কোর্ট। এ ছাড়া মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আদানিদের ওপর অনির্দিষ্ট আর্থিক জরিমানা এবং বিধিনিষেধ চেয়েছে।
গৌতম আদানি ও সাগর আদানিসহ আরও সাতজনের বিরুদ্ধে ২৬ দশমিক ৫ কোটি মার্কিন ডলার ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায় গৌতম আদানির পাশাপাশি সাগর আদানি, আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের নির্বাহী ও আজিউর পাওয়ার গ্লোবাল লিমিটেডের নির্বাহী সিরিল কাবানেসকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
নিউইয়র্কের আদালতে করা মামলার নথি থেকে জানা গেছে, কথিত ঘুষের ঘটনাগুলো ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ঘটেছে। দিও এই সব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে আদানি গোষ্ঠী।
এই মামলা প্রসঙ্গে আদানির মুখপাত্র বলেছেন, মার্কিন বিচার বিভাগ ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আদানি গ্রিনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে, তা ভিত্তিহীন এবং আমরা তা অস্বীকার করছি। এমনিতেও সেই বিবৃতিতেই মার্কিন বিচার বিভাগ বলেছে- এই চার্জগুলো শুধু অভিযোগমাত্র ও অভিযুক্তকে ততক্ষণ নির্দোষ বলে গণ্য করা হবে যতক্ষণ না এই সব অভিযোগ প্রমাণিত হচ্ছে।
অবশ্য আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভারতীয় কর্মকর্তাদের ঘুসের প্রস্তাব দিয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল তারা। এরই মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে বাজার থেকে টাকা তুলেছিল তারা।
দাবি করা হয়েছে, ২০২১ সালের জুলাই এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। ভারতীয় কর্মকর্তাদের ২৫ কোটির ডলারেরও বেশি ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে সৌরশক্তি সরবরাহের লাভজনক চুক্তি পেয়েছিল আদানি। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, রয়টার্স